অসীমলাল মুখার্জি,কলকাতা, ২৫ সেপ্টেম্বর; স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন 'শিব জ্ঞানে জীব সেবা' করতে হবে, যার অর্থ হলো জীবকে শিব বা ঈশ্বরের প্রকাশ রূপে জেনে সেবা করা। এই দর্শনে প্রত্যেক জীবের মধ্যে দেবত্ব নিহিত, তাই মানুষের সেবা করার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরেরই সেবা করা হয়। এটি একটি নৈতিক ও আধ্যাত্মিক নীতি, যেখানে একজন অভাবী ব্যক্তিকে করুণার পাত্র না ভেবে উপাসনার পাত্র হিসেবে দেখা হয়। এই নীতি মেনেই চলে 'দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির'।
আজ দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির -এর পক্ষ থেকে কলকাতার কাঁকুড়গাছির শ্রীকৃষ্ণ কলোনী ও মানিকতলার খালধার ডোমপাড়াতে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। এই কাজে উপস্থিত ছিলেন দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির -এর সভাপতি সুশান্ত মজুমদার, সম্পাদক মিলন খামারিয়া, ট্রাস্টি মেম্বার সুমন রায় ও সাধারণ সদস্য বিধান সরকার।
উপস্থিত ছিলেন 'মহা উদ্ধারণ মঠের'( কাঁকুড়গাছি,কলকাতা) সম্পাদক শ্রীমৎ বন্ধুগৌরব মহারাজ ও মঠের সদস্য তপন দেব, শ্যামল ধর। দেশের মাটির কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন 'ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটি'র স্বামী অচ্যুতানন্দ মহারাজ।
এদিন মহা উদ্ধারণ মঠে রান্না করা খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ করা হয়। বন্যার্ত মানুষরা লাইন দিয়ে এসে প্রসাদ গ্রহণ করেন। মহারাজ বৃন্দ ও দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির-এর সবাই মিলে খিচুড়ি বিতরণ করেন। প্রায় ৮০০ এর বেশি মানুষ লাইন দিয়ে প্রসাদ খান।
এই খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ সম্পর্কে শ্রীমৎ বন্ধুগৌরব মহারাজ বলেন, দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির-এর আজকের কাজে আমি ভীষণ খুশী হলাম। তারা সব সময় মানুষের পাশে থাকে। আমি আজ নিজে উপস্থিত থেকে তাদের সাথে মানুষের সেবা করতে পেরে নির্মল আমন্দ পেয়েছি।
স্বামী অচ্যুতানন্দ মহারাজ বলেন, বন্যার্ত মানুষরা ভীষণ কষ্টে আছে দেখে আমার ভীষণ খারাপ লাগছিল। আজ তাদের মুখে অন্ন তুলে দিতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।
সভাপতি সুশান্ত মজুমদার বলেন, কলকাতায় হঠাৎ করে প্রচুর বৃষ্টি হবার জন্য বন্যা হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় মানুষ ভীষণ অসহায় হয়ে পরেছিল। ১০ জনের বেশি মানুষ বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মারা গেছেন, এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। মানুষের বিপদে পাশে আছি আমরা সব সময়।
সম্পাদক মিলন খামারিয়া বলেন, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির সেবাকাজ করছে। পাশাপাশি শহরের মানুষের পাশেও আমরা আছি। সেবায় আমাদের পরম ধর্ম। মানুষ আমাদের সেবা গ্রহণ করে আমাদের কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেছেন।
দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির-এর উপদেষ্টা ড. কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, আমার খুব ভাল লাগছে দেখে যে, দেশের মাটি গোষ্ঠী বিভিন্ন ধরনের সেবাকাজ করছে। আজ শহরের বন্যার্ত মানুষদের কাছেও তারা পৌঁছে গেছে, এটা তাদের বৃহত্তর কাজের বার্তা দেয়।
Comments
Post a Comment