মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইন্সটিটিউট অফ এশিয়ান স্টাডিজের (সংস্কৃতি মন্ত্রক, ভারত সরকার) সহযোগিতায়
'ভারতীয় সংস্কৃতি ন্যাস' ও 'সংস্কার ভারতী পশ্চিমবঙ্গ' যৌথ উদ্যোগে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা - 'বাইশে শ্রাবণ' ও সঙ্গীতাচার্য্য শৈলজারঞ্জন মজুমদারের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকীর শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন আয়োজন করল, কলকাতার ICCR-এর সত্যজিৎ রায় সভাগৃহে।
এই সভায় উপস্থিত ছিলেন, সংস্কার ভারতীর অখিল ভারতীয় কেন্দ্রীয় সম্পাদিকা নীলাঞ্জনা রায়, MAKAIAS-এর ডিরেক্টর ড. সরূপ প্রসাদ ঘোষ, স্কটিশ চার্চ কলেজের অধ্যাপিকা বিদিশা সিন্হা,
ভারতীয় সংস্কৃতি ন্যাসের অছি সুভাষ ভট্টাচার্য।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষন ড. সরূপ প্রসাদ ঘোষ। কবিগুরু রবিঠাকুরের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন সন্মানীয় অতিথি বৃন্দ। অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন ডঃ সরূপ প্রসাদ ঘোষ। হাতে রাখী পরিয়ে দেন মহাশ্বেতা চক্রবর্তী ও উপহার তুলে দেন গোপাল কুন্ডু। অতিথিদের হাতে ক্যালেন্ডার তুলে দেন অমিতাভ মুখোপাধ্যায়।
অধ্যাপিকা বিদিশা সিন্হা বলেন, আমাদের প্রতিদিনের যাপিত যে জীবন, সেই প্রতিযোগিতা মূলক জীবন নানান হিংসা-দ্বেষ-অসহিষ্ণুর মধ্যে কাটছে, রবীন্দ্রনাথ মনে করেছেন এর মধ্যে কোনো সৌন্দর্যের অধিষ্ঠান নেই। সেই জীবনটা যদি শেষ হয় মৃত্যুতে, সেই জীবনে সমবেত হয়ে যাচ্ছে তার সমস্ত সু-কর্ম। এই মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে হয়ে যাচ্ছে আমি ও তুমির মিলন। তাই মৃত্যুর অন্তরে সব সময় চলছে জীবনের অবিরাম আনন্দ লীলা। রবীন্দ্রনাথ মৃত্যুকে এই ভাবেই ভেবেছেন, তাঁর লেখনীতে যার প্রকাশ ঘটিয়েছেন।
বাইশে শ্রাবণের কবি প্রয়াণ দিবসে সংস্কার ভারতী পশ্চিমবঙ্গ প্রান্তের ৬০ জন শিল্পীরা সমবেত সঙ্গীতের মাধ্যমে কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
পরিচালনায় ছিলেন তনুশ্রী মল্লিক ও অনিমা দাস।
কবি প্রণামের পাশাপাশি এদিন সঙ্গীতাচার্য্য শৈলজারঞ্জন মজুমদারের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকীর শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদিত হয় সঙ্গীতের মাধ্যম দিয়ে। পরিবেশনায় ছিলেন সর্বাণী চক্রবর্তী ও সংস্কার ভারতী পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীবৃন্দ।
সর্বাণী চক্রবর্তী জানান যে,কবি গুরুর সঙ্গীতের বিন্দুমাত্র পরিবর্তনও শৈলজারঞ্জন পছন্দ করতেন না। তিনি মনে করতেন - অল্প অল্প পরিবর্তনই এক সময় বড়ো পরিবর্তন করে দেয়। তিনি কবি গুরুর কাছ থেকে বর্ষামঙ্গলের নতুন নতুন গান লিখিয়ে নিয়েছিলেন।
এই অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে সংস্কার ভারতীর সাধারণ সম্পাদক তিলক সেনগুপ্ত-এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আমরা পড়ি, তাঁর গান আমরা শুনি কিন্তু তাকে আত্মস্থ করতে পারছি না হয়তো। একটা অপসংস্কৃতি আমাদের রাজ্যে ছড়িয়ে যাচ্ছে, কবির গানকে বিকৃত করা হচ্ছে, তাতে আদতে কবিকেই অসম্মান করা হচ্ছে বলে আমরা মনে করি। কবির বাণী ও ভাবনাকে গ্রহণ করলেই বাঙালি জাতির উন্নতি হবে বলে আমার মনে হয়।
Comments
Post a Comment