রাজ্য সরকারের অসংগঠিত শ্রমিকদের প্রতি বঞ্চনার কারণেই কি কেন্দ্র সরকারের e Shram কার্ডের প্রতি মানুষের ঝোঁক বাড়ছে.?
শুভ কল্যাণ বিশ্বাস, স্বচ্ছ বার্তা - খবর প্রকাশিত হওয়ার দিন পর্যন্ত কেন্দ্র সরকারের e Shram কার্ডের রেজিস্ট্রেশন ইতিমধ্যে 10 কোটি 60 লক্ষ 4 হাজার এর গণ্ডি পার করেছে. নতুন এই প্রকল্পটি চালু হওয়ার তিন মাসের মধ্যে এত সংখ্যক মানুষ ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেছে. প্রায় দেড়শো অসংগঠিত কাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষ ইতিমধ্যে নথিভূক্ত হয়েছে এই e Shram পোর্টালের মাধ্যমে.
যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় এক কোটির উপরে মানুষ ইতিমধ্যে নথিভূক্ত হয়ে গেছে e Shram রেজিস্ট্রেশনে. খুবই দ্রুত হারে অসংগঠিত কাজের সঙ্গে যুক্ত পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এই eShram রেজিস্ট্রেশন করে নিয়েছেন.
কিন্তু কেন পশ্চিমবঙ্গের অসংগঠিত কাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষ এই ভাবে নাম লেখালেন.
উল্লেখ করা যেতে পারে করোনা মহামারীতে দেখা গেছে পশ্চিমবঙ্গে কত পরিযায়ী শ্রমিক বাস করে.
অথচ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শ্রমদপ্তর নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প ব্যবস্থা করেছেন. যেখানে একাধিক সুযোগ-সুবিধার কথা উল্লেখ আছে শ্রমিকদের জন্য. কিন্তু তার পরেও কেন্দ্র সরকারের e Shram পোর্টালে অসংগঠিত শ্রমিকদের নাম নথিভূক্ত এক কোটি ছাড়িয়ে গেছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে. কি কি সুবিধা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র সরকারের এই Shram কার্ডে. সেটা ভালো ভাবে স্পষ্ট হয়নি এখনো. কিন্তু এই পোটালে যেভাবে একজন শ্রমিকের ডাটা সংগ্রহ করা হচ্ছে তা থেকে স্পষ্ট ধারণা তৈরি হয়ে যায় যে কিছু একটা ভালো হতে চলেছে শ্রমিকদের পক্ষে.
কিন্তু রাজ্য সরকার নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা উল্লেখ করার পরেও সেই সুযোগ সুবিধা থেকে বর্তমানে তাদেরকে বঞ্চিত করে চলেছে. এই কারণে হয়তো কেন্দ্র সরকারের শ্রমিক কার্ডের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়ে চলেছে. রাজ্য সরকারের শ্রমদপ্তর ভবন নির্মাণ, সড়ক পথ নির্মাণ,রেল,ট্রামলাইন, বিমানবন্দর,সেচ নিকাশি,বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও জল সরবরাহ ব্যবস্থা, টেলিভিশন এবং টেলিফোনের টাওয়ার নির্মাণ, পাইপলাইন ইত্যাদি কাজের সঙ্গে যুক্ত যদি সাম্রাজ্যের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় এনে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ঘোষণা করেছিলেন. কিন্তু সেই সব সুযোগ-সুবিধা বর্তমানে কোন শ্রমিকই পাচ্ছে না সেভাবে. সেই কারণেই কেন্দ্র সরকারের শ্রমিক কার্ডের প্রতি অসংগঠিত শ্রমিকদের ঝোঁক বেড়েছে.
একজন নির্মাণকর্মী বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন রাজ্য সরকারের কাছ থেকে. যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মাসিক একটি সঞ্চয় করেছিল শ্রমিকরা. মাসিক 25 টাকা করে শ্রমিকরা সঞ্চয় করত আর সরকার দিত 25 টাকা করে. একজন শ্রমিক 60 বছর অতিক্রম করলে সেই শ্রমিক তার জমাকৃত টাকা সুদ সমেত ফেরত পেত এতদিন . আর যদি নিম্ন পক্ষে পাঁচ বছর রেজিস্ট্রেশন এর আওতায় থাকে সেই শ্রমিক তাহলে তাকে পেনশনের আওতায় আনা হতো. কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের বিভিন্ন প্রকল্প ঘোষণা করার পরেও তাঁদেরকে বঞ্চনা করা হচ্ছে. এমনকি কিছু কিছু অসংগঠিত শ্রমিক যে পরিমাণ টাকা তারা সঞ্চয় করেছিলে এতদিন যাবত সে টাকাও তারা ফেরত পাচ্ছে না 60 বছর হয়ে যাওয়ার পরেও.
এটা নিয়ে অনেক শ্রমিকদের অভিযোগ আছে. অনেকেই হয়তো পেনশন পায় নি তার কারণ তারা পাঁচ বছর শ্রমদপ্তর এর রেজিস্ট্রেশন এর আওতায় ছিল না. কিন্তু তারা তাদের জমা করা টাকা ফেরত চাইছে শ্রমদপ্তর এর কাছ থেকে.
রাজ্য সরকার অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য যন্ত্রপাতি ক্রয় এর জন্য টাকা বরাদ্দ করেছিল যেটা বর্তমানে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে. সাইকেল ক্রয় করার জন্য ও শীতবস্ত্র ক্রয় জন্য টাকা দেওয়া হতো. বর্তমানের সেটাও আর দেওয়া হয় না. আর এই সমস্ত বিভিন্ন কারণেই হয়তো কেন্দ্র সরকারের শ্রমিক কার্ডের প্রতি মানুষের ঝোঁক বেড়েছে.
এখন দেখা যাক কেন্দ্র সরকার অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য কি কি সুবিধা ঘোষণা করেন.
Comments
Post a Comment