গত ২৮শে নভেম্বর ২০২১ মহারাষ্ট্রের মূলচেরা তহশীল অন্তর্গত নেতাজি সুভাষচন্দ্র মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নিখিল ভারত বাঙালি সমন্বয় সমিতির তৃতীয় রাজ্য প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সর্বভারতীয় সভাপতি সুবোধ বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি কমিটির ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটির রূপ- রেখা তৈরি করবে.ততদিন কার্যবাহক কমিটি রাজ্য কমিটির দায়িত্বভার পালন করবে.
এই সভায় মহারাষ্ট্র রাজ্য কমিটির সভাপতি শ্রী দীপক হালদার কার্যকরী কমিটির পাঁচ বছরের কার্যকাল সমাপ্তি ঘোষণা করেন এবং নতুন কমিটির শুভেচ্ছা কামনা করে তিনি বলেন আমি নতুন কমিটিতে থাকি বা না থাকি,আমৃত্যুকাল এই সমিতির হয়ে কাজ করতে চাই।
প্রদেশ সম্পাদক প্রিন্সিপাল বিধান ব্যাপারী বিগত পাঁচ বছরের কার্যকালের সাফল্য পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে সভায় উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন,বিগত কার্যকালে আমরা বিশাল কিছু করেছি সে দাবি করিনা। তবে মহারাষ্ট্রের প্রতিটা উদ্বাস্তুর ঘরে ঘরে নিখিল ভারতের প্রদীপ জ্বালাতে আমরা সক্ষম হয়েছি। দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্দোলনের ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা আমাদের সম্মানের দৃষ্টিতে দেখেন। এছাড়াও সমস্ত রাজনৈতিক দল আমাদের গুরুত্ব দেন। এজন্য সংগঠনের নিরপেক্ষতা বাঁচিয়ে রাখতে হবে ভবিষ্যতের জন্য.
কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নির্মল মন্ডল বলেন, মহারাষ্ট্রে অতীতে ছয়টা উদ্বাস্তু সংগঠন আমরা করেছি। কোন সংগঠনের টিকে থাকেনি। নিখিল ভারত ব্যতিক্রমি সংগঠন। দিন দিন তার জনজোয়ার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবং সারা ভারতের ১৮ টি রাজ্যের শাখা বিস্তার লাভ করেছে। কৃতিত্ব সমিতির মধ্যমনি সুবোধ বিশ্বাস মহাশয়ের.
সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে
প্রিন্সিপাল মনোরঞ্জন মন্ডল বলেন, মহারাষ্ট্রের পুনর্বাসিত সমাজের সকল স্তরে নেতৃত্বরা আজকের সাংগঠনিক সভায় শত শত মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। মনে হচ্ছে আমরা দিল্লির মত বাঙালি উদ্বাস্তু সংসদে বসে আছি। আনন্দের বিষয় আমরা সবাই ক্ষুধা কষ্ট ভুলে হাসিমুখে সাত ঘন্টা মিটিং এ বসে আছি। এতে পরিষ্কার বোঝা যায়, আমরা সংগঠন ও সমাজ কে কত ভালোবাসি। এই ভালোবাসা দিয়েই আমরা নিখিল ভারত কে বাঁচিয়ে রাখবো।
নাগপুর, গোন্দিয়া, চন্দ্রপুর, মূলচেরা চামর্শিী কমিটির পক্ষ থেকে শৈলেন মল্লিক,চন্দ্রকান্ত মাঝি,ধিরাজ মুখার্জি, রবিন সাহা, প্রিন্সিপাল শৈলেন খয়রাতি, প্রিন্সিপাল রঞ্জিত মন্ডল সহো অনেকে বিদায়ী কমিটি কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সভার আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু সুবোধ বিশ্বাস বলেন, আমরা অনেকে রাজনৈতিক দলের বড়াই করি, কিন্তু যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে, বন্যা হয় তখন কোন দলের সমর্থক কিছুই দেখে না। সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তদ্রুপ বহির্বঙ্গের বাঙালিদের উপরে যখন কোন সামাজিক বিপর্যয় নেমে আসে, তখন আমরা কে কোন দলের সমর্থক, আক্রমণকারীরা সে কথা ভাবেনা।
২০০৮ সালে মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলীর উদ্বাস্তু বাঙ্গালীদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল, মা-বোনদের নির্যাতন করা হয়েছিল। সেদিন কে বিজেপি? কে কংগ্রেস ? অথবা কে শিবশেনা দলের সমর্থক দেখা হয়নি। সেদিন মার খেয়েছি বাঙালি হবার অপরাধে। তার প্রতিকারে নিখিল ভারত কে সংগঠিত করতে হবে। যেখানে বাঙালি আক্রান্ত হবে, নিখিল ভারত প্রতিবাদ করবে। অধিকারের দাবিতে মুখোর হবে। এই সংগঠন আগামী দিনে নতুন প্রজন্ম কে মাথা উঁচু করে আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচার রাস্তা প্রশস্ত করবে।
সম্মেলন সফল করতে দিবা রাত্র যেসব নেতৃবৃন্দ শ্রম দিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছে প্রিন্সিপাল ডঃ রঞ্জিত মন্ডল, প্রিন্সিপাল শৈলেন খরাতি,প্রিন্সিপাল প্রহ্লাদ মন্ডল, বাদল সাহা, রবিন সাহা, যুধিষ্ঠির বিশ্বাস, প্রকাশ দত্ত, গৌতম অধিকারী, নিখিল হালদার,বিষ্ণু রায়, গৌর বালা, হরি পদ পান্ডে, বিধান হালদার, উত্তম সমদ্দার, অপু মজুমদার, সমীর অধিকারী, নিখিলেশ যোদ্ধার, সূর্যকান্ত বাছাড়, সুভাষ গণপতি রনেন মন্ডল, পিন্টু অধিকারী,নারায়ন অধিকারী,সুবাস সরকার বিধান ব্যাপারী দীপক হালদার সহ অনেকে।
সভামঞ্চ সঞ্চালন করেন ইলা বন্ত হালদার।
এদিন সভাস্থলে প্রায় এক হাজার বাঙালি উদ্বাস্তুদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে.
Comments
Post a Comment